ময়মনসিংহে এক দিনেই সড়কে ঝরল ১০ প্রাণ

প্রকাশিত: ২১-০৬-২০২৫, ০২:৩৮
Maymensingh news

21 June 2025 / 02:40 PM  @trendsbd24.com

ময়মনসিংহে এক দিনে পৃথক পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১ জন।শুক্রবার (২০ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফুলপুর উপজেলার ইন্দারাপার মোড়ে কুরিয়ার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে ও সন্ধ্যা ৬ টার দিকে পার্শ্ববর্তী তারাকান্দা উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় হিমালয় ফিলিং স্টেশনের সামনে দুর্ঘটনায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।তারাকান্দায় নিহতরা হলেন- জেলার ধোবাউড়া উপজেলার বরাটিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের স্রী জবেদা খাতুন (৮৫), ফুলপুর উপজেলার মদীপুর সুতারপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাকিবুল হাসান (১৫) ও ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের শুইলাম বুধবারিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম (৩৫)। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আলম সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন।

ফুলপুরে নিহত ৭ জনের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- একই উপজেলার জসিম উদ্দিনের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৮), ময়েজ উদ্দিনের ছেলে জহুর আলী (৭০), আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী হাসিনা খাতুন (৫০) ও রংপুরের আজিম উদ্দিন (৩৫)।লিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, শুক্রবার রাতে হালুয়াঘাট থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি দ্রুতগতিতে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসটি ইন্দারাপার মোড়ে কুরিয়ার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা মাহিন্দ্রাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাহিন্দ্রায় থাকা ৪ জন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হয়। এসময় গুরুতর আহত হয় আরও ৮ জন। তাদের মধ্যে দুইজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ৬ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বাসচালক পালিয়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং  যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

এর আগে বিকেলে ময়মনসিংহ-শেরপুর আঞ্চলিক সড়কে উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় হিমালয় ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি অ্যাম্বুল্যান্স যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার যাত্রী এক নারী ও এক শিশু নিহত হয়। এসময় অটোরিকশাচালক ছাড়াও আরও তিন যাত্রী আহত হন। এছাড়াও আহত হয় অ্যাম্বুল্যান্সের হেলপারসহ আরও একজন। পরে আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অটোচালক মোহাম্মদ আলম মারা যান।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাদি বলেন, ‘‘বিক্ষুব্ধ জনতা বাসে আগুন ধরিয়ে দিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। নিহতদের মধ্যে সবাই মাহিন্দ্রার যাত্রী ছিলেন। তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন।’’ 

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. টিপু সুলতান বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সটি পার্শ্ববর্তী হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। গাড়িতে কোনো রোগী ছিল না। দুর্ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’’ 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাতে ফুলপুরে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় ৬ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে মাহিন্দ্রার একজন যাত্রী মারা গেছেন। মাহিন্দ্রার চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’’ 

তিনি আরও বলেন, ‘‘এছাড়া তারাকান্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও ৬ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে অর্থোপেডিক্স ও সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে অটোরিকশাচালক মারা গেছেন। অন্যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’’ 

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পর দুইটি স্পট পরিদর্শন করেছি। মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকজনের মরদেহ চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’’ 

Do you like this news?

Yes No

বিজ্ঞপ্তি

আপনি এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছেন এর অর্থ হল: আপনি আমাদের ব্যবহারের শর্তাবলী মেনে নিয়েছেন।