শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে দিনভর আটকে থাকার পর সন্ধ্যায় পুলিশের পাহারায় উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বের হয়েছেন দুই উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও সি আর আবরার এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আটকে ছিলেন তাঁরা। বাইরে চলছিল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।
বিকেলে একবার কলেজ থেকে বের হওয়ার পর দিয়াবাড়ি মোড়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ফিরে এসেছিলেন তাঁরা। এরপর দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক ভবন-৭-এর দ্বিতীয় তলায় অবস্থান নেন। তাঁদের গাড়িগুলো কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে রাখা হয়। তখন থেকে একাডেমিক ভবন-৭ এর পাশাপাশি ভবন-৫ এর সামনে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিলেন। পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদেরও ক্যাম্পাসে সক্রিয় দেখা যায়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ করে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে নিচে নেমে আসেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সদস্যরা। সন্ধ্যা ৭ টা ৩৪ মিনিটে তাঁরা কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। কলেজের প্রধান ফটক থেকে বের হয়ে তাঁদের গাড়িবহর দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ডিপো দিয়ে পার হয়ে যায়।
গতকাল সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত এবং ১৬৫ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের অধিকাংশই শিশু এবং তারা মাইলস্টোনের স্কুলশিক্ষার্থী ছিল। গতকাল উদ্ধার তৎপরতা চলার সময় মাইলস্টোনের শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা আজ সকাল ৯টায় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছিল। এর মধ্যে সকাল সোয়া ৯টার দিকে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সভা-সমাবেশ, দলবদ্ধ কর্মসূচি কিংবা অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, দিয়াবাড়ি গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় কোনো ধরনের জমায়েত বা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা যাবে না। পরে শিক্ষার্থীরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাইরে বিক্ষোভ শুরে করে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সি আর আবরার ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যান। তাঁরা সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা তাঁদের ঘিরে ধরেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি জানান। এসব দাবি হলো, নিহত ব্যক্তিদের সঠিক নাম-পরিচয় প্রকাশ; আহত ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা; শিক্ষার্থীদের প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ; বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল করে আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালু এবং বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও কেন্দ্র সংস্কার করে আরও মানবিক ও নিরাপদব্যবস্থা চালু, শিক্ষকদের গায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাত তোলার ঘটনার জন্য জনসমক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া।
আপনি এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছেন এর অর্থ হল: আপনি আমাদের ব্যবহারের শর্তাবলী মেনে নিয়েছেন।