সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এটি "নারিকেল জিঞ্জিরা" নামেও পরিচিত। নীল জলরাশি, সাদা বালির সৈকত, প্রবাল প্রাচীর এবং নির্মল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এটিকে দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানে পরিণত করেছে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে, কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের স্থান।
ইতিহাস বলে, আরব ও মালয়েশিয়ার বণিকরা একসময় এই দ্বীপে বিশ্রাম নিত। ব্রিটিশ শাসনামলে এটি "সেন্ট মার্টিন" নাম পায়। স্থানীয়ভাবে এটি "দারুচিনি দ্বীপ" নামেও পরিচিত।
সেন্ট মার্টিনের প্রধান আকর্ষণ এর নির্মল সমুদ্র সৈকত। স্ফটিক স্বচ্ছ নীল জল এবং নরম সাদা বালি পর্যটকদের মনে শান্তি আনে।
বাংলাদেশে একমাত্র সেন্ট মার্টিনেই প্রবালের দেখা মেলে। এখানে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫৩ প্রজাতির শৈবাল এবং ২৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী রয়েছে।
সামুদ্রিক কাছিম: সবুজ কাছিম (Green Turtle) এবং অলিভ রিডলি কাছিম এখানে ডিম পাড়ে।
পাখির অভয়ারণ্য: শীতকালে নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে।
নাইট আইল্যান্ড: সন্ধ্যায় জোনাকির আলোয় ঝলমলে দ্বীপ।
সেন্ট মার্টিন থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই ক্ষুদ্র দ্বীপটি সম্পূর্ণ নির্জন। নৌকায় করে এখানে যাওয়া যায়।
স্থানীয় জেলেদের জীবনযাত্রা দেখতে পারেন। এখানে তাজা সামুদ্রিক মাছ ও শুঁটকি কিনতে পাওয়া যায়।
পূর্ব দিকে সূর্যোদয় এবং পশ্চিমে সূর্যাস্তের দৃশ্য অসাধারণ।
ঢাকা থেকে: প্রথমে কক্সবাজার বা টেকনাফ যেতে হবে।
টেকনাফ থেকে: স্পিডবোট বা ট্রলারে সেন্ট মার্টিন যাওয়া যায় (ভাড়া ৫০০-১০০০ টাকা)।
হোটেল/রিসোর্ট: দ্বীপে বাজেট থেকে লাক্সারি হোটেল রয়েছে।
খাবার: তাজা সামুদ্রিক মাছ, কড়া-ভাজা, নারিকেলের পানি।
প্রবাল নষ্ট করা নিষিদ্ধ।
প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা যাবে না।
নিরাপত্তার জন্য সন্ধ্যার পর সমুদ্র সৈকতে যাওয়া নিরাপদ নয়।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। এর সৌন্দর্য সংরক্ষণে আমাদের সকলের সচেতনতা প্রয়োজন। এই দ্বীপে গেলে মনে হবে, স্বর্গের এক টুকরো যেন বাংলার মাটিতে নেমে এসেছে!
"সেন্ট মার্টিনের নীল জল, সাদা বালি—
মনে হয় যেন স্বপ্নেরই আঁচল খানি!"
আপনি এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছেন এর অর্থ হল: আপনি আমাদের ব্যবহারের শর্তাবলী মেনে নিয়েছেন।