ধূমপান একটি মারাত্মক বদভ্যাস যা শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতি করে। সিগারেটে থাকা নিকোটিন ও বিষাক্ত রাসায়নিক শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে ধ্বংস করে এবং ক্যান্সার, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগসহ নানা জটিল রোগের কারণ হয়। তবে ইচ্ছাশক্তি ও সঠিক পরিকল্পনা থাকলে ধূমপান ত্যাগ করা সম্ভব।
প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করুন: "আমি কেন ধূমপান ছাড়তে চাই?"
স্বাস্থ্য, পরিবার বা অর্থ সাশ্রয়—যেকোনো কারণকে প্রেরণা হিসেবে নিন।
একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করে দিন (যেমন: জন্মদিন, নতুন মাসের শুরু)।
কোন পরিস্থিতিতে বা কোন সময়ে ধূমপান করতে ইচ্ছে করে? (যেমন: চা-কফি খাওয়ার পর, স্ট্রেসে, বন্ধুদের সাথে আড্ডায়)
এই ট্রিগারগুলো এড়িয়ে চলুন বা বিকল্প অভ্যাস গড়ে তুলুন।
নিকোটিন গাম, প্যাচ বা লজেঞ্জ ব্যবহার করে ধীরে ধীরে নিকোটিনের মাত্রা কমানো যায়।
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ (যেমন: Bupropion, Varenicline) ব্যবহার করতে পারেন।
ধূমপানের ইচ্ছা হলে ফল খান, চুইংগাম চিবান বা পানি পান করুন।
শারীরিক পরিশ্রম করুন (হাঁটা, যোগব্যায়াম, জিম)—এতে স্ট্রেস কমবে এবং ডোপামিন হরমোন বাড়বে।
নিজের সিদ্ধান্তের কথা অন্যদের জানান—তারা আপনাকে উৎসাহ দেবে।
ধূমপায়ী বন্ধুদের থেকে সাময়িক দূরত্ব বজায় রাখুন।
নতুন শখ গড়ে তুলুন (যেমন: গান শোনা, বই পড়া, গার্ডেনিং)।
ধূমপানের কথা মনে হলে গভীর শ্বাস নিন বা ১০ সেকেন্ড গুনুন—ইচ্ছেটা কমে যাবে।
একটি ডায়েরি রাখুন এবং ধূমপান ছাড়ার পর স্বাস্থ্য, অর্থ ও সময়ের সঞ্চয় লিখে রাখুন।
প্রতি মাসে কত টাকা বাঁচছে তা দেখে নিজেকে পুরস্কৃত করুন!
"একটা সিগারেটে কী আসে-যায়?"—এই চিন্তা থেকে বিরত থাকুন।
ইচ্ছা চলে না গেলে ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন—মস্তিষ্কের ক্রেভিং সাধারণত ৩-৫ মিনিট স্থায়ী হয়।
২০ মিনিট পর: রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হয়।
১২ ঘণ্টা পর: রক্তে কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা কমে।
২ সপ্তাহ পর: ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ে।
১ বছর পর: হৃদরোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে।
ধূমপান ত্যাগ করা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। একবার ছেড়ে দিলে আপনি নিজেই অনুভব করবেন কীভাবে জীবন পাল্টে যায়! "আজই প্রথম দিন"—এই মন্ত্র নিয়ে শুরু করুন।
"ধূমপান ছেড়ে সুস্থ থাকুন,
নিজের ও পরিবারের জীবন উজ্জ্বল করুন!"
দ্রষ্টব্য: প্রয়োজনে ডাক্তার বা হেল্পলাইনের (জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল: ১৬১৫৫) সহায়তা নিন।
আপনি এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছেন এর অর্থ হল: আপনি আমাদের ব্যবহারের শর্তাবলী মেনে নিয়েছেন।